মুখটা দেখা যাচ্ছে না
আমার বুকের দিকে একটা বন্দুক তাক করে দাঁড়িয়ে আছে
ট্রিগারে চাপ পড়া মাত্রই
বুকের পাঁজর ভেঙে বেরিয়ে আসে
একটা বিশালাকার প্রজাপতি, হলুদ, কালো ডোরাকাটা;
কোকিলের মতোন একটা লেজও আছে ।
মাটির ওপর পড়ে যাচ্ছে এই প্রজাপতি বহনকারী দেহ
প্রথমে চুল, তারপর ঘাড় এবং পিঠ;
মাটির আঘাতে ব্যথা পাবার কথা
অথচ কি আশ্চর্য আরাম !
শেষের সাত মিনিট রুক্ষ ত্বক ফেটে হাঁসি বেরিয়ে আসছে
মনে পড়ে যাচ্ছে আমি কেমন করে
একটা তিমির পেট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিলাম,
ছোট মাছ বলে আমার সেদিন বেরিয়ে আসা হলো না,
আমার মনে পড়ে যাচ্ছিলো
বেঁচে যাওয়ার জন্য কি দ্রুত ছুটেও পালাতে পারিনি,
আমার গলা ছিঁড়ে ঠিকই শিকার করে নিয়ে
তার শাবকদের খাওয়াতে সক্ষম হয়েছিলো সেই বাঘ;
এরপরও থেমে থাকেনি পৃথিবীর মানুষেরা,
এত পাখি এসে বসতো আমার গায়ে, হাতে, পায়ে, চুলে,
আমার ছায়ায় বসে একজন বই পড়তো রোজ,
গভীর শেকড় পর্যন্ত মানুষেরা যেতে না পারলেও
কান্ডের মাঝ থেকে কেটে ফেলে দিয়ে
আমার অর্ধেক শরীর পাঠিয়ে দিয়েছিলো
ফার্নিচারের ফ্যাক্টরিতে ।
অবশিষ্ট অংশে হয়েছিল একটা মন্দির,
কাটা শরীরের ওপর নানান রকম ফুল, শিদুর দিয়ে
পুজোর আয়োজন হতো ।
তিন মিনিট চলে গেল,
আমার মনে পড়ছিলো কি করে আমি মরে গেছিলাম এর আগেও বহুবার ।
সাদা জামা পড়ে শিউলি আর বকুল ফুল কুড়োনোর কথা আমার মনে পড়ছিলো
শেষ এক মিনিট এর আগের তিন মিনিট,
আমার মনে পড়ছিলো জীবন্ত সেই সময়ের কথা,
সন্ধ্যায় মাঠ থেকে সূর্যাস্ত না দেখে তখন বাড়ি ফিরতে ভালো লাগতো না,
আরো কিছুক্ষণ এই সময়টা দেখতে চাইলেও
শেষ এক মিনিট চলে আসে;
আমার মনে পড়তে থাকে
হ্যাট পড়া লোকটার হাতের বন্দুকটা আমি আগেও বোধহয় দেখেছি !
এই সময়টাতে আমি আগেও বোধহয় এসেছি,
ঠিক এভাবেই একটা প্রজাপতি বেরিয়ে চলে গেছিলো
আমার বুকের পাঁজর ভেঙে !
এই মুহূর্ত আমি কত হাজার বার যে ঘুরে গেছি,
ছোট্টবেলায় প্রজাপতিটার পেছন পেছন দৌড়ে
তাকে ধরে জামার ভেতর পুরে ফেলেছিলাম ।
সেই আনন্দে,
মরে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে
আমার রুক্ষ ত্বক ফেটে হাঁসি বেরিয়ে আসছিলো ।
I fantasize my death a lot.
ReplyDeleteমরে যাওয়ার আগে শেষের সাত মিনিট যে দীর্ঘ এক দে জা ভ্যু হতে পারে..।।
অনেক গভীর ভাবনা। ভালো লেগেছে।
ReplyDelete